হিজাব নারীর ব্যক্তিগত অধিকার: প্রিয়াঙ্কা

 








কর্ণাটকের হিজাব বিতর্কে ছাত্রীদের সমর্থন জানিয়ে একটি টুইট করেছেন কংগ্রেসের নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এনডিটিভি জানিয়েছেন,বুধবার প্রিয়াঙ্কা টুইট বার্তায় বলেন, নারীরা কোন ধরনের কাপড় পরবে, সেটি তাদের একান্ত ব্যক্তিগত এবং সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত অধিকার।


তিনি আরও বলেন, একজন নারী কী পরতে চায় তা তার নিজের অধিকার। হতে পারে তা বিকিনি, ঘোমটা, জিন্স কিংবা হিজাব। এটি ভারতীয়দের সাংবিধানিক অধিকার। হ্যাশট্যাগ ‘লড়তি হুঁ, লড় সকতি হুঁ’ দিয়ে তিনি তাই নারীদের অপদস্ত করা বন্ধ করার আহ্বান জানান।


প্রিয়াঙ্কার গান্ধির এ মন্তব্য রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ সামনেই উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন, সেই নির্বাচনে নারীদের বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে ‘লড়তি হুঁ, লড় সকতি হুঁ’ স্লোগান দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। ‘লড়তি হুঁ, লড় সকতি হুঁ’ হ্যাশট্যাগটি উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে কংগ্রেসের সাত দফার একটি দাবি।


হিজাব বিতর্ক নিয়ে সরব হয়েছেন নোবেল শান্তি বিজয়ী এবং নারী অধিকার কর্মী মালালা ইউসুফজাইও। মঙ্গলবার টুইটে তিনি বলেন, পড়াশোনা এবং হিজাবের মধ্যে কোনো একটা বেছে নিতে বাধ্য করছে কলেজ। হিজাব পরে মেয়েদের স্কুলে যেতে নিষেধ করার বিষয়টি ভয়ানক বলেন তিনি। খোলামেলা হোক বা ঢাকা পোশাক নারীদের অবজেক্টিফিকেশনের ধারা চলছেই। একই সঙ্গে ভারতীয় নেতাদের প্রতি আবেদন নিয়ে তিনি বলেন, অবশ্যই, এখন মুসলিম নারীদের মূল সমাজ থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি রুখতে হবে।


এদিকে আগামী তিন দিনের জন্য ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্যটির একটি সরকারি কলেজে হিজাব পরাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্কে শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ আইসিসির জানুয়ারির মাসসেরা পুরুষ ক্রিকেটার হওয়ার দৌড়ে এবাদত হোসেন


মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী বাসাভারাজ এস বোম্মাই এক টুইটবার্তায় এই ঘোষণা দেন তিনি।


সম্প্রতি সরকারি কলেজে নির্দিষ্ট পোশাক পরার নিয়ম জারি করা হয়েছে। তবে এর প্রতিবাদ জানিয়ে হিজাব পরার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মুসলমান ছাত্রীরা। গত মাসে উদুপুর জেলায় এক কলেজে ছয় ছাত্রী হিজাব পরে কলেজে যান। তবে নির্দিষ্ট পোশাক না পরায় তাদের কলেজের গেটে আটকে দেওয়া হয়। এ সময় কলেজের ছাত্রীরা ক্লাসে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য অধ্যক্ষের কাছে দাবি জানান।


এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্র ও শনিবার একদল শিক্ষার্থী হিজাব পরিধানের অনুমতি দেওয়ার দাবিতে মিছিল করে। তবে এর বিরোধিতা করছেন বিজেপি নেতারা। এরই মধ্যে মঙ্গলবার হিজাব পরার দাবিতে বের করা ওই মিছিলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে, যা নিয়ে উত্তেজনা শুরু হয়। এরপরই স্কুল-কলেজ বন্ধের ঘোষণা দেয় সরকার।


উদুপুর জেলার সেই কলেজের পাঁচ শিক্ষার্থী হিজাব পরার অনুমতি চেয়ে কর্ণাটকের হাইকোর্টে রিট করেছেন।


এদিকে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে শিক্ষার্থীসহ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কর্ণাটকের হাইকোর্ট। উদুপুর একটি সরকারি কলেজের পাঁচ নারীর আবেদন করা একটি পিটিশনের শুনানি চলছে এখন আদালতে।


গত মাসে সরকারি মহিলা পিইউ কলেজ থেকে প্রথম হিজাব প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। তখন হিজাব পরে কলেজে আসলে ছয় শিক্ষার্থীকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এরপর তা দেশটির বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।


বেশ কয়েকটি কলেজে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করা হলে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। হিজাবের বিরুদ্ধে গেরুয়ারা জোরালো ও মুখোমুখি অবস্থান নিতে শুরু করেন। শনিবার সমতা, ঐক্য ও জনশৃঙ্খলা নষ্ট করে এমন পোশাক পরা নিষিদ্ধ করেছে কর্ণাটক সরকার।


আরও পড়ুনঃ জায়েদ খান-নিপুণের বিষয়ে নতুন নির্দেশ আদালতের


*

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন